আরিফুল ইসলাম আশাঃ সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক আইরিন সুলতানার বিরুদ্ধে সিজারের সময় ভুল করে জরায়ু নাড়ী কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। রোগীর স্বজনদের অনুমতি ছাড়াই পুরো জরায়ু কেটে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে জানান রোগীর আত্মীয়রা। এঘটনায় মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে ওই রোগী।
রোববার (১৫ অক্টোবর ) দুপুরে বিষয়টি গণমাধ্যম কর্মীদের জানায় ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বামী। এর আগে বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর ) দুপুরে সাতক্ষীরা শহরের বুশরা হাসপাতালে এঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ওই রোগী হলেন ,আইরিন রহমান (২৬) তিনি সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়ার উপজেলার গুগা গ্রামের আব্দুল্লাহ্ আল মামুনের স্ত্রী।
অপরদিকে, অভিযুক্ত চিকিৎক আইরিন সুলতানা সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের গাইনী ও প্রসূতি বিভাগে চিকিৎসক হিসাবে দায়িত্বরত আছেন।।
ভুক্তভোগী রোগীর স্বামী আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেন, বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরের দিকে তার স্ত্রী অসুস্থবোধ করলে সাতক্ষীরা শহরের খুলনা রোড সংলগ্ন বেসরকারি বুশরা হাসপাতালে নেন। সেখানে নেওয়ার পর দায়িত্বরত স্টাফরা দ্রুত সিজারের কথা বলে। দুপুর আড়াইটার দিকে সাতক্ষীরা মেডিকেলের গাইনী চিকিৎক আইরিন সুলতানা সিজার করে ছেলে সন্তান দেন আমাদের কাছে । সিজারের পর অপারেশন থিয়েটর থেকে রোগীকে কেবিনে নেওয়া হলে ব্লিডিং শুরু হয়। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতাল কতৃপক্ষ্যকে জানালে পুনঃরায় অপারেশন থিয়েটরে নেয় রোগীকে। আধা ঘন্টা পর অপারেশ থিয়েটর থেকে আবার কেবিনে নেওয়া হয় রোগীকে। কিছু সময়ের মধ্য আবার সেজারের কাটা স্থান থেকে ব্লিডিং শুরু হয়। বিষয়টি হাসপাতাল কতৃপক্ষকে জানালে রোগীকে তৃতীয় বার ওটিতে নিয়ে জরায়ুর নাড়ী কেটে বাদ দেওয়া হয়।
তিনি আরো বলেন, আমার কোন প্রকার অনুমতি ছাড়া আমার স্ত্রীর জরায়ু নাড়ী কাটলো চিকিৎসক। বুশরা হাসপাতাল কতৃপক্ষ্যের কাছে কারন জানতে চাইলে তারা নানা ধরনের অসঙ্গিতিপূর্ণ কথার্বাতা বলছেন। এ বিষয়ে আমি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
বুশরা হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সিজার করার পর অনেক রোগীদের ব্লিডিং হয়। আইরিন নামের রোগীটি একই ঘটনা ঘটে। দুই দফায় চেষ্টার পর যখন চিকিৎসক ব্যর্থ হয়েছেন তখন সিনিয়র কনসালটেন্ট শরিফুল ইসলামকে জানালে তিনি এসে যেটা ভাল মনে করেছেন সেটা করেছেন।
রোগীর অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া কি ভাবে জরায়ু নাড়ী কাটা হলো এমন প্রশ্নের জবাবে ব্যবস্থাপক বলেন, এবিষয় আমার জানা নেই। মেডিকেল সাইন্স জানে এ বিষয়ে। জরায়ু কাটার বিষয়ে আমাদের হাসপালে কোন নিয়মনীতি নাই।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা মেডিকেলের গাইনি চিকিৎসক ডাঃ আইরিন সুলতানাকে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাঃ সুফিয়ান রুস্তম বলেন, সেজারের পরে অনেকের ব্লিডিং হয়। যদি জরায়ু কাটার প্রয়োজন হলে অবশ্যই রোগীর অভিভাবকের অনুমতি দরকার । যদি অনুমতি ছাড়া এটা করা হয়ে থাকে তাহলে সেটা অপরাধ । এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে তাদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply